অবস্থান ও আয়তন:
টাঙ্গাইল জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত, যা ঢাকা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জেলার উত্তর-পশ্চিমে জামালপুর, উত্তরে ময়মনসিংহ, পূর্বে গাজীপুর, দক্ষিণে মানিকগঞ্জ ও ঢাকা এবং পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ জেলা অবস্থিত। জেলার মোট আয়তন প্রায় ৩,৪১৪.৪০ বর্গ কিলোমিটার। যমুনা নদী জেলার পশ্চিম সীমান্ত বরাবর প্রবাহিত হওয়ায় এই জেলা কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
নামকরণ ও ইতিহাস:
টাঙ্গাইল নামটি এসেছে “টাঁগ” শব্দ থেকে, যার অর্থ উঁচু জায়গা। এক সময় এটি ছিল উঁচু ভূমির একটি অঞ্চল যেখানে বহু গাছপালা ও জঙ্গল ছিল। স্থানীয়রা এই জায়গাটিকে “টাঙ্গাইল” বলতে শুরু করে, অর্থাৎ ‘উঁচু জায়গা’। ব্রিটিশ শাসনামলে টাঙ্গাইল ছিল ময়মনসিংহ জেলার অংশ। ১৯৬৯ সালে এটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
টাঙ্গাইল ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় এই জেলার জনগণের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষা ব্যবস্থা:
টাঙ্গাইল শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। জেলার মধ্যে অবস্থিত কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ, টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সরকারি সা’দত কলেজ, করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ রয়েছে।
সংবাদপত্র ও প্রেস ক্লাব:
টাঙ্গাইলে একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। “দৈনিক মজলুমের কণ্ঠ”, “দৈনিক উত্তরবঙ্গ সংবাদ”, “দৈনিক টাঙ্গাইল প্রতিদিন” ইত্যাদি স্থানীয়ভাবে পরিচিত। টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাব সাংবাদিকদের সংগঠিত ও সংবাদপত্রের মান উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।
উপজেলা সমূহ:
টাঙ্গাইল জেলায় মোট ১২টি উপজেলা রয়েছে। এগুলো হলো:
টাঙ্গাইল সদর
মির্জাপুর
দেলদুয়ার
ঘাটাইল
কালিহাতি
বাসাইল
গোপালপুর
ভুঞাপুর
নাগরপুর
সখিপুর
মধুপুর
ধনবাড়ী
পৌরসভা সমূহ:
জেলাটিতে একাধিক পৌরসভা রয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল পৌরসভা অন্যতম প্রাচীন ও আধুনিক পৌরসভা। এছাড়াও মির্জাপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, কালিহাতি, সখিপুরসহ মোট ১১টি পৌরসভা আছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (বিশিষ্ট প্রকৌশলী ও শিক্ষাবিদ)
শামসুর রহমান খান শহীদ (রাজনীতিবিদ)
হাসানুল হক ইনু (রাজনীতিবিদ)
মওলানা ভাসানী (রাজনীতিবিদ ও কৃষক নেতা)
সালমা খান (প্রথম নারী রাষ্ট্রদূত)
উল্লেখযোগ্য স্থান:
বঙ্গবন্ধু সেতু
মধুপুর গারো পাহাড়
দেলদুয়ার মির্জাপুরের কুমুদিনী কমপ্লেক্স
আতিয়া জামে মসজিদ
নাগরপুর রাজবাড়ি
যমুনা রিসোর্ট
বিন্দুবাসিনী পার্ক