শেরপুর জেলা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী জেলা। জেলার উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ময়মনসিংহ জেলা এবং পূর্বে জামালপুর জেলা অবস্থিত। শেরপুর জেলার মোট আয়তন প্রায় ১,৩৬৪.৬৭ বর্গ কিলোমিটার। এটি ভৌগোলিকভাবে পাহাড়, টিলা ও সমতল ভূমির সমন্বয়ে গঠিত, যার ফলে কৃষি, বনজ সম্পদ এবং পর্যটনের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল।
শেরপুর নামের পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা। ধারণা করা হয়, মুঘল আমলে শের আলী গাজী নামে এক জমিদার বা নেতা এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যার নামানুসারেই এই জেলার নামকরণ হয় ‘শেরপুর’। ইতিহাসে আরও জানা যায়, মুঘল ও ব্রিটিশ শাসনামলে এটি ভাওয়াল ও গারো পাহাড় অঞ্চলের সাথে ব্যবসা ও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পথ ছিল। ১৮৭৪ সালে শেরপুর মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে উন্নীত হয়।
শেরপুরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার সুযোগও রয়েছে। শেরপুর সরকারি কলেজ, শেরপুর মহিলা কলেজ, শেরপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখানে গড়ে উঠেছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও স্কুল ও মাদ্রাসা গড়ে ওঠায় শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষায় অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়।
শেরপুরে বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘শেরপুর প্রতিদিন’, ‘গারো খবর’, ‘মহাখালী বার্তা’ ইত্যাদি। এছাড়া জাতীয় পত্রিকাগুলোর স্থানীয় এজেন্সি ও সংবাদদাতা রয়েছে। শেরপুর প্রেস ক্লাব জেলার সাংবাদিক সমাজের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে।
শেরপুর জেলায় মোট ৫টি উপজেলা রয়েছে:
শেরপুর সদর
ঝিনাইগাতী
নালিতাবাড়ী
শ্রীবরদী
নকলা
প্রতিটি উপজেলাই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ এবং স্থানীয় প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর ভিত্তি।
শেরপুর জেলায় ৫টি পৌরসভা রয়েছে:
শেরপুর পৌরসভা (প্রাচীনতম ও বৃহত্তম)
ঝিনাইগাতী
নালিতাবাড়ী
শ্রীবরদী
নকলা
এই পৌরসভাগুলোতে শহর উন্নয়ন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
এ. কে. এম. ফজলুল হক – প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ভাষাসংগ্রামী।
আবদুর রহিম – বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাহিত্যিক।
মোঃ রফিকুল ইসলাম (সাবেক মন্ত্রী) – দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
গারো পাহাড় ও ঝিনাইগাতী গারো গ্রাম – উপজাতীয় সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
ভেলুয়া জমিদার বাড়ি – ঐতিহাসিক নিদর্শন।
মহাসিঙ্গা পাহাড় ও বনাঞ্চল – হাইকিং ও প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয়।
চেল্লাখালি ইকোপার্ক – বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের একটি দৃষ্টান্ত।
©২০২৫ ময়মনসিংহ জেলা সমিতি, শেরে বাংলা নগর থানা সকল স্বত্ব সংরক্ষিত