নেত্রকোনা জেলা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি সীমান্তবর্তী জেলা। এর উত্তর দিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ, পূর্বে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ এবং পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা অবস্থিত। জেলা সদর থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। নেত্রকোনার মোট আয়তন প্রায় ২,৮১১ বর্গ কিলোমিটার।
নেত্রকোনা নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। একটি প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, ‘নেত্রা’ অর্থাৎ চোখ এবং ‘কোণা’ মানে প্রান্ত বা কোণ—এই দুই শব্দের সংমিশ্রণে এই নামকরণ হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এটি নেত্রনদীর পাড়ে অবস্থিত একটি কোণ থেকে নাম এসেছে। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮২ সালে নেত্রকোনা মহকুমা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
নেত্রকোনা জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতিতে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান অবদান রেখেছে। জেলার মধ্যে নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, আনন্দমোহন কলেজের শাখা, মঈনপুর কলেজ, বারহাট্টা কলেজ, আটপাড়া কলেজ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। জেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ নেত্রকোনা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে চলমান। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষাও এখানে বিস্তৃত।
নেত্রকোনায় বেশ কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়, যেমন – দৈনিক আমাদের নেত্রকোনা, দৈনিক জনপদ বার্তা, সাপ্তাহিক শ্যামল নেত্রকোনা ইত্যাদি। নেত্রকোনা প্রেস ক্লাব জেলার সাংবাদিকদের সংগঠিত একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, যা নিয়মিত সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
নেত্রকোনা জেলার অধীনে মোট ১০টি উপজেলা রয়েছে। এগুলো হলো:
নেত্রকোনা সদর
আটপাড়া
বারহাট্টা
মোহনগঞ্জ
খালিয়াজুড়ি
মদন
কেন্দুয়া
কলমাকান্দা
দুর্গাপুর
পূর্বধলা
নেত্রকোনা জেলায় মোট ৬টি পৌরসভা রয়েছে। সেগুলো হলো:
নেত্রকোনা
মোহনগঞ্জ
মদন
কেন্দুয়া
পূর্বধলা
দুর্গাপুর
নেত্রকোনার গর্ব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী প্রমীলা দেবী এই জেলার বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়াও প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এই জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সঙ্গীতজ্ঞ বারী সিদ্দিকী এই জেলার বিশিষ্ট সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃত।
নেত্রকোনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থানগুলো হলো:
বিজয়পুর চিনামাটির পাহাড় (দুর্গাপুর)
সোমেশ্বরী নদী ও গারো পাহাড়
মোহনগঞ্জ রেলস্টেশন (ঐতিহাসিক গুরুত্ব)
কালিয়াকুড়া হাওর
কেন্দুয়ার নজরুল স্মৃতি পাঠাগার
খালিয়াজুড়ি ও মদনের বিস্তৃত হাওর অঞ্চল
©২০২৫ ময়মনসিংহ জেলা সমিতি, শেরে বাংলা নগর থানা সকল স্বত্ব সংরক্ষিত