জামালপুর জেলা বাংলাদেশের উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত, যা ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত। জেলার পূর্বে ময়মনসিংহ, পশ্চিমে টাঙ্গাইল ও শেরপুর, উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য এবং দক্ষিণে টাঙ্গাইল জেলা অবস্থিত। এ জেলার আয়তন প্রায় ২,০৩১.৯৮ বর্গ কিলোমিটার।
জেলার নামকরণ হয়েছে জামালপুর শহরের নামানুসারে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, দিল্লির এক সেনাপতি “জামাল খাঁ” মুঘল আমলে এ অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করলে এলাকার নামকরণ হয় “জামালপুর”। পূর্বে এটি ময়মনসিংহ জেলার অংশ ছিল। ১৯৭৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর জামালপুরকে আলাদা জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে এটি ব্রহ্মপুত্র নদকেন্দ্রিক কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির একটি প্রাণকেন্দ্র ছিল।
জামালপুর জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জামালপুর জিলা স্কুল (স্থাপিত ১৮৮১), জামালপুর সরকারি মহিলা কলেজ, জামালপুর সরকারি কলেজ, ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা। এই জেলার শিক্ষার হার ক্রমবর্ধমান এবং নারী শিক্ষার উন্নয়নও লক্ষণীয়।
জেলার সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা অঙ্গন বেশ সক্রিয়। জামালপুর প্রেস ক্লাব জেলার প্রধান সাংবাদিক সংগঠন হিসেবে কাজ করে আসছে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে জামালপুর বার্তা, দৈনিক মেঘনা, দৃষ্টি জামালপুর ইত্যাদি। এছাড়া জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরাও এখানে সক্রিয়।
জামালপুর জেলার মোট ৭টি উপজেলা রয়েছে:
জামালপুর সদর
মেলান্দহ
ইসলামপুর
দেওয়ানগঞ্জ
মাদারগঞ্জ
বকশীগঞ্জ
সরিষাবাড়ী
জেলায় রয়েছে ৭টি পৌরসভা:
জামালপুর পৌরসভা
মেলান্দহ পৌরসভা
ইসলামপুর পৌরসভা
সরিষাবাড়ী পৌরসভা
মাদারগঞ্জ পৌরসভা
দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা
বকশীগঞ্জ পৌরসভা
প্রতিটি পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
মহফুজ আনাম – ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক, জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
আব্দুর রউফ চৌধুরী – ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও রাজনীতিবিদ।
আনোয়ারুল হক – প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি।
মির্জা আজম – জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জামালপুর শহীদ মিনার – শহরের অন্যতম প্রতীকী স্থান।
জামালপুর টাউন হল ও পাবলিক লাইব্রেরি – সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
ব্রহ্মপুত্র নদ – জেলার জীবনযাত্রা ও কৃষি ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি।
ইসলামপুর বালুঘাট – প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নদীর দৃশ্যপট উপভোগের স্থান।
সরিষাবাড়ীয়ের শিল্প অঞ্চল – গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল খাতের জন্য বিখ্যাত।
দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন – ঐতিহাসিক স্টেশন, বহু পুরনো স্থাপত্য।
©২০২৫ ময়মনসিংহ জেলা সমিতি, শেরে বাংলা নগর থানা সকল স্বত্ব সংরক্ষিত